Dark Mode
Wednesday, 29 March 2023
Logo

যেসব কারণে বাড়ছে রডের দাম

যেসব কারণে বাড়ছে রডের দাম

নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ৬০ গ্রেডের (মাইল্ড স্টিল) এমএস রডের দাম এখন প্রতি টন লাখ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে শিগগিরই লাখ টাকা পার হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্মাণের এখন ভর মৌসুম চলছে। এই সময়ে ক্রমাগত দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারি অবকাঠামো নির্মাণের খরচও বাড়ছে। বাড়তি দাম তুলতে না পেরে সরকারি নির্মীয়মাণ প্রকল্পের কাজ ফেলে রাখছেন ঠিকাদাররা।

 

দাম বাড়ার পেছনে তিনটি বড় কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ঋণপত্র সংকটের কারণে স্ক্র্যাপ বা পুরনো জাহাজ আমদানি একেবারেই কমে যাওয়া। দ্বিতীয়ত, ডলারের বিনিময়মূল্য বেশি থাকা এবং তৃতীয়ত, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া। এ সমস্যার আপাতত কোনো সমাধান মিলছে না বলেই দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন রড উৎপাদন ও বিপণনে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

 

ইস্পাত উৎপাদনে শীর্ষে থাকা বিএসআরএমের ডিএমডি তপন সেনগুপ্ত বলেন, ‘ঋণপত্র সংকটের কারণে পুরনো জাহাজ আসা কমেছে, একই সঙ্গে ধস নেমেছে স্ক্র্যাপ বা টুকরা লোহা আমদানিতে। এই কাঁচামাল না থাকায় অনেক ছোট কারখানা উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।’

 

তিনি বলেন, স্থানীয় বাজার থেকে কাঁচামাল কিনতে হচ্ছে টনপ্রতি ৭১ হাজার ৫০০ টাকায়; সেই কাঁচামাল দিয়ে রড উৎপাদন করতে গেলে প্রতি টন বিক্রি করতে হবে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকার ওপরে। কারণ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। এর প্রভাবে রডের দামও বেড়েছে।

 

রড উৎপাদনে আরেক শীর্ষ প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম স্টিল প্লান্টের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে আন্তর্জাতিক বাজারে রডের দাম টনে ৫০ থেকে ৬০ ডলার বেড়েছে। এর পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যেমন বড় অঙ্কের বেড়েছে, তেমনি আমরা যে ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতাম, সেই এলএনজি আমদানিও বন্ধ ছিল।’

 

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে কাঁচামাল আমদানির পদক্ষেপ না নিলে এ সংকট থেকে উত্তরণের সুযোগ দেখছি না। ব্যাংকগুলোকে ঋণপত্র খোলায় সহযোগিতার পাশাপাশি ডলার সরবরাহও নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে দাম বাড়া ঠেকানো যাবে।’

 

রড উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে পুরনো টুকরা লোহা, যার বেশির ভাগই আমদানি করে মেটানো হয়। এর বাইরে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চাহিদা মেটানো হয় দেশের জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ড থেকে। ঋণপত্র সংকটের কারণে এখন স্ক্র্যাপ তো আসছেই না, সেই সঙ্গে ইয়ার্ডে পুরনো জাহাজ আসায়ও ধস নেমেছে।

 

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকারস অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) তথ্য বলছে, ২০২১ সালে ২৭ লাখ টন স্ক্র্যাপ এসেছে জাহাজ ভেঙে। ২০২২ সালে এসেছে মাত্র ১১ লাখ টন। আর এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ২০২৩ সালে সাত-আট লাখ টনের বেশি হবে না। ইয়ার্ডে জাহাজ না আসায় স্থানীয়ভাবেও কাঁচামাল জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

 

পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু দেশের একটি শীর্ষ দৈনিককে বলেন, ‘আমার ইয়ার্ডের সক্ষমতা ৮০ হাজার টনের, কিন্তু ইয়ার্ডে আছে মাত্র সাড়ে চার হাজার টন। আমি কাঁচামালই যদি না পাই, তাহলে ইয়ার্ড সচল রাখব কেমনে? আমাদের ১৩০টি ইয়ার্ডের মধ্যে চালু আছে মাত্র ৩৫টি।’ তিনিও মনে করেন পরিস্থিতি উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে ঋণপত্র খোলায় সহযোগিতা করা।

 

খুচরা বাজারে এখন ৬০ গ্রেডের এমএস রড বিক্রি হচ্ছে টনপ্রতি ৯৭ হাজার থেকে ৯৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিএসআরএম ৯৯ হাজার টাকা, একেএস ৯৯ হাজার টাকা, কেএসআরএম ৯৮ হাজার টাকা, জিপিএইচ ৯৮ হাজার টাকা এবং আরএসআরএম ৯৮ হাজার টাকায়।

 

চট্টগ্রাম সম্মিলিত ঠিকাদার পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম মর্তুজা টুটুল বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর ও জেলায় অন্তত ১০০ প্রকল্প নির্মাণ বিলম্বিত হচ্ছে।’

 

বিটি/ আরকে

Comment / Reply From

Stay Connected

Vote / Poll

ঈদযাত্রায় এবছর যানজট অনেকটা কম হবার কারণ কী বলে মনে করেন?

View Results
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ পদক্ষেপ
0%
যথাসময়ে সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ
100%
যানজট এখনও রয়েই গেছে
0%
21313