মহেশখালী ইপিজেডে যুক্ত হচ্ছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো

মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে সেখানে শিল্পের বিকাশ ঘটবে, বিনিয়োগ আহরণ সম্ভব হবে, রফতানি আয় বাড়বে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা-৯-এ “অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিল্পায়ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে মহেশখালীতে। একে একে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে সেখানে। ৫ম অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে টেকনাফের সাবরাংয়ে। সরকার আগামী ১৫ বছরে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হবে এই প্রকল্প। গভীর সমুদ্রবন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। ইতোমধ্যে মহেশখালীতে ১১ হাজার ৭২৫ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজার সদর থেকে সড়কপথে ৪০ কিলোমিটার ও নৌপথে ৪ কিলোমিটার দূরে মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী, পাহাড় ঠাকুরতলা ও গোরকঘাটা মৌজাজুড়ে ১ হাজার ৪৩৮ একর এলাকায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল-১, মহেশখালীর উত্তর নলবিলা মৌজার ৮২৭ একর জমিজুড়ে মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-২, মহেশখালীর ধলঘাটা মৌজার ৬৭৬ একর এলাকাজুড়ে মহেশখালী-৩ ও হামিদেরদিয়া, কুতুবজোম ও ঘটিভাঙা মৌজার ৮ হাজার ৭৮৪ একর এলাকাজুড়ে এ অঞ্চল-৪। এসব অঞ্চল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর মতে, এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে শুধু মহেশখালীর নয়, পুরো জেলার অর্থনীতির চিত্র বদলে যাবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় ১৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা, ইনডোর সাব-স্টেশনসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা, ইটিপি ও ৬-তলা ভিত্তিবিশিষ্ট ২০১৫ বর্গমিটারের ৪-তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক, ১২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ফুটপাত, ৯ কিলোমিটার সীমানা প্রাচীর, ২৭ কিলোমিটার ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন (সুয়ারেজ) নেটওয়ার্ক, ১২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে।
এদিকে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, “মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা)-এর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ” প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। প্রকল্পটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। সম্প্রতি (৩১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এর মাধ্যমে এই এলাকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান বাড়বে। দেশের সামগ্রিক টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Comment / Reply From
You May Also Like
নতুন সংবাদ
পড়ে দেখুন
Vote / Poll
ঈদযাত্রায় এবছর যানজট অনেকটা কম হবার কারণ কী বলে মনে করেন?