বিমানবন্দরে পচনশীল পণ্য রফতানিতে জটিলতা নিরসন চান ব্যবসায়ীরা

কাস্টমসের নতুন নিয়ম ও প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালের উচ্চ আমদানিকরসহ নানাবিধ কারণে বিমানবন্দর দিয়ে পচনশীল পণ্য রফতানিতে জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে রফতানিকারকরা। ফলে বিদেশী ক্রেতা হারানোর পাশাপাশি দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে দাবি করছে কৃষিপণ্য ও তাজা শাক-সবজি রফতানিকারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ মনসুর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসব সমস্যা সমাধানের জন্য জানিয়েছেন।
ওই চিঠিতে কৃষিপণ্য ও তাজা শাক-সবজি রফতানিকারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন জানায়, আগস্ট থেকে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রফতানির জন্য নতুন পদ্ধতি চালু করেছে। নতুন নিয়মের কারণে, অন্যান্য ড্রাই পণ্যের মতো করে পচনশীল কৃষিপণ্যের সব ডকুমেন্ট রফতানি পরবর্তী চালানেই গ্রিন করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বিল অব এক্সপোর্ট, পরীক্ষণ, শুল্কায়ন তাৎক্ষণিকভাবে করার কথা বলা হলেও রাতে ব্যাংক চালু না থাকায় রফতানিকারকারা তাদের কাগজপত্র প্রয়োজনমতো সংশোধন বা পরিবর্তন করতে পারছেন না। ফলে পণ্য সঠিক ফ্লাইটে রফতানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা।
রফতানিকারকরা আরো জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রফতানির বিপরীতে করা সি নাম্বার বা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে অনেক সি-নাম্বার বাতিল বা স্থগিত পেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে তারা একাধিকবার বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে তবে এখনো কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি। যার ফলে কৃষিপণ্য রফতানির ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিদেশী ক্রেতার কাছে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য যেসব রফতানির ডকুমেন্ট পেন্ডিং রয়েছে তা দ্রুত ছাড় করার সুপারিশ করেছে তারা।
তারা আরো জানায়, বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেক সময় যে ফ্লাইটে পণ্য পাঠানোর কথা থাকে সেটা বাতিল হয়ে যায়। এতে বাধ্য হয়ে অন্য ফ্লাইটে পণ্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় রফতানিকারকদের। তবে নতুন নিয়মে রফতানির চালানের এয়ারলাইনসের কোড লেখার বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। এতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য বিমানবন্দরে তাৎক্ষণিকভাবে বিল অব এক্সপোর্ট সংশোধনের সুযোগ তৈরির কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বিএফভিএপিইএ আরো জানায়, তৈরি পোশাকের মতো পণ্যের সঠিক পরিমাণ তাজা শাক-সবজির ক্ষেত্রে সবসময় উল্লেখ করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ট্রাফিক জ্যাম ও ফ্লাইটের বিভিন্ন টেকনিক্যাল সমস্যাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে বিভিন্ন সময় পণ্যের পরিমাণ কম-বেশি হয়। তবে নতুন নিয়মে এসব কারণেও পণ্য রফতানিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এজন্য আগের মতো শিপমেন্ট পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পণ্যের পরিমাণ সংশোধনের সুপারিশ জানিয়েছেন তারা।
রফতানিকারকার আরো মনে করেন, কৃষিজ পণ্য প্যাকেজিংয়ের বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানিতে ৫০ শতাংশের অধিক কর দিতে তাদের। ফলে ভালো প্যাকেজিং করতে না পারায় পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। আবার আকর্ষণীয় প্যাকেজিং না করতে পারায় বিদেশী ক্রেতারাও এসব পণ্য কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই এসব কাঁচামাল আমদানিতে এখানে করের হার কমানোর সুপারিশ করেছেন তারা।
Comment / Reply From
You May Also Like
নতুন সংবাদ
পড়ে দেখুন
Vote / Poll
ঈদযাত্রায় এবছর যানজট অনেকটা কম হবার কারণ কী বলে মনে করেন?