Dark Mode
Saturday, 14 September 2024
Logo

ডায়াবেটিস ডেকে আনতে পারে অন্ধত্ব

ডায়াবেটিস ডেকে আনতে পারে অন্ধত্ব


ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হলে তার প্রভাব পড়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস চোখের সব অংশের তুলনায় রেটিনার বেশি ক্ষতি করে। যার যত বেশি দিন ধরে ডায়াবেটিস রয়েছে, তার রেটিনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তত বেশি। সার্বিক চিকিৎসা না হলে এই রোগী ধীরে ধীরে অন্ধত্ববরণ করেন। এছাড়া ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দীর্ঘদিনের আক্রান্ত রোগী এই একই সমস্যায় ভুগতে পারেন। পৃথিবীতে যেসব কারণে মানুষ অন্ধ হয়, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি তার অন্যতম কারণ। আর এই সমস্যায় বেশিরভাগই আক্রান্ত হয় টাইপ-১ ডায়াবেটিসে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অ্যাকসেস টু ডায়াবেটিস কেয়ার’।  

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষের ডায়াবেটিসে যত্নের অ্যাক্সেস নেই। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ম মাফিক যত্ন নেওয়া এবং জটিলতা এড়াতে সহায়তা প্রয়োজন। ওষুধ, প্রযুক্তি, সহায়তা এবং যত্ন—তাদের জন্য আবশ্যিক। ডায়াবেটিসের যত্ন এবং প্রতিরোধে সরকারের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

 

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি দুজনের মধ্যে একজন জানেন না তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগ টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। দেশে এ মুহূর্তে ৮৪ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ৩০ বছরের বেশি বয়সের সবাইকে পরীক্ষা করানো হলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীতে মানুষ যেসব কারণে দৃষ্টিশক্তি হারান, তার মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিসের কারণে চোখে যে সমস্যা তৈরি হয় তার নাম ‘ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি’।

 

ডায়াবেটিস চোখের ছোট ছোট রক্তনালীর ক্ষতি করে। ফলে রক্তক্ষরণ হয়। রক্তনালী থেকে চর্বিজাতীয় জিনিস অর্থাৎ কোলেস্টেরল ও লিপিড বের হয়ে আসে। একইসঙ্গে রেটিনার বিভিন্ন স্তরে জমা হয় তরল পদার্থ। সবকিছু মিলে রোগী ধীরে ধীরে কম দেখতে শুরু করেন। কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে কম দেখা বা ক্ষীণ দৃষ্টি এক ভয়ংকর সমস্যা। কম্পিউটারে দেখতে সমস্যা, এমনকি লিখতেও তাদের ঝামেলা হয়। একপর্যায়ে রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয় এবং রেটিনা ছিঁড়েও যেতে পারে।

 

বাংলাদেশ ভিট্রিও রেটিনা সোসাইটির তথ্য বলছে, এই রোগ প্রতিরোধে দরকার সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া। সংগঠনটি বলছে, দেশে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির প্রভাব কমানোর চাবিকাঠি প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণের মধ্যেই আছে। ইতিবাচক ফলাফলের জন্য স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের বাস্তবায়ন এবং চোখের যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো স্ক্রিনিং করানো হলে ক্ষতির মাত্রা রোধ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিস-জনিত রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতার জন্য সব চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর থেকে নিয়মিত প্রতিবছর একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা রেটিনা বিশেষজ্ঞ দিয়ে চোখের রেটিনা পরীক্ষা প্রয়োজন।’

 

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ খান বলেন, ‘আমরা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। একজন মানুষের লক্ষণ থাকুক কিংবা না থাকুক, একটি বয়স পার হলে নিয়মিত পরীক্ষা করাবেন—ডায়াবেটিস আছে কিনা। সাধারণত ৪০ বছর পর চেকআপ করার পরামর্শ আমরা দেই। কিন্তু তার আগেই যদি কেউ বেশি মুটিয়ে যায়, কিংবা পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে আরও আগে থেকে পরীক্ষা করানো শুরু করতে হবে।’

 

Comment / Reply From

Stay Connected

Vote / Poll

ঈদযাত্রায় এবছর যানজট অনেকটা কম হবার কারণ কী বলে মনে করেন?

View Results
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ পদক্ষেপ
0%
যথাসময়ে সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ
100%
যানজট এখনও রয়েই গেছে
0%
21313