ছয়দিনে পুঁজিবাজারে লেনদেন অর্ধেকে নেমেছে
ছয়দিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে টানা নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ সময়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ১৮৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ অর্ধেকে নেমেছে। মূলত বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের গুঞ্জন এবং গত রোববার থেকে ২২টি কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে। এর পর থেকেই টানা কমতে থাকে সূচকটি এবং সর্বশেষ গতকাল ৬ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে ১৮৮ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচকটি। ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছিল। যেখানে গতকাল লেনদেন কমে ৮১৮ কোটি টাকায় নেমেছে। এ সময়ে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ১২৮ কোটি টাকা।
গতকাল লেনদেন শুরুর প্রথম ৯ মিনিট পর্যন্ত সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এর পর থেকেই তা নিম্নমুখী হতে শুরু করে। মাঝে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। গতকাল দিন শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ প্রায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২ হাজার ১২৯ পয়েন্ট। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে প্রায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ওরিয়ন ইনফিউশনসের শেয়ারের।
ডিএসইতে গতকাল দৈনিক লেনদেন কমেছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে ৮১৮ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৯২৪ কোটি টাকা। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৯৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৯৭টির, কমেছে ২৪৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দখলে ছিল প্রকৌশল খাতের। ৯ দশমিক ৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে ছিল সাধারণ বীমা খাত। মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৫ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর ব্যাংক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৮ শতাংশ। গতকাল ডিএসইতে কাগজ ও মুদ্রণ, পাট এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সাধারণ বীমা, প্রকৌশল ও টেলিযোগাযোগ খাত।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক ও লেনদেন নিম্নমুখী ছিল। এক্সচেঞ্জটির নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৫৭ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১০ হাজার ৮৩১ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৯৬ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ৯৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৮ হাজার ৮৬ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৪৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৬টির, কমেছে ১৬১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২১টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১৯ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২৯ কোটি টাকা।
Comment / Reply From
You May Also Like
নতুন সংবাদ
পড়ে দেখুন
Vote / Poll
ঈদযাত্রায় এবছর যানজট অনেকটা কম হবার কারণ কী বলে মনে করেন?